২০২৫ ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের একটা বিশ্লেষণ


প্রথমেই মনে রাখতে হবে কূটনীতি হল শান্তিপূর্ণ যুদ্ধ আর যুদ্ধ মানে অশান্তিপূর্ণ কূটনীতি। পেহেলগাও সন্ত্রাসের পরে ভারত সরকার পাকিস্তান সরকারকে সন্ত্রাসীদের প্রধান সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত করে। কিন্তু কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেনি। পেহেলগাও সন্ত্রাসীদের কাউকে গ্রেফতার করে যদি তার থেকে তথ্য বের করে বলা যেত যে পাকিস্তান সরকার দোষী তাহলে সবচেয়ে ভালো হত। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল বিশ্বের সামনে পেহেলগাও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পাকিস্তান সরকারের কোনো যোগাযোগ ভারত সরকার বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে পারেনি। স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বের কোনও দেশই এই যুদ্ধের পক্ষে দাড়ায়নি। তিন বৃহৎ শক্তির (চীন মার্কিন রাশা) প্রত্যেকে ভারত সরকারকে যুদ্ধ থেকে বিরত থাকতে বলে। চীন সরাসরি পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়ায়। তুর্কিয়ে ও আজারবাইজানও পাকিস্তানের পক্ষে সরাসরি দাঁড়ায়। ভারতের পাশে কেবল ইসরাইল দাঁড়ায় যে বর্তমানে বিশ্বে প্যালস্তাইন যুদ্ধের কারণে খুবই কুখ্যাত। প্রমাণ ছাড়া যুদ্ধে যাওয়া প্রথম থেকেই কূটনৈতিক পরাজয় বলা যায়। সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে তাদের সাথে পাকিস্তান সরকারের যোগাযোগের কিছু প্রমাণ যোগাড় করে ভারত সরকারের যুদ্ধে যাওয়া উচিত ছিল। প্রয়োজনে আরও সময় নিয়ে। তাহলে কেউ পাকিস্তানের পাশে দাঁড়াত না খোলাখুলি ভাবে। লুকিয়ে লুকিয়ে সাহায্য করত হয়তো।

এবার যুদ্ধে আসা যাক। প্রথমে একটা খবর আসে যে ভারতের ৪টে রাফাল ফাইটার-কে পাকিস্তান তড়িৎ চুম্বকিয় তরঙ্গ দিয়ে অচল করে দিয়েছে। তার দু দিন পরেই ৭ই মে ভারত-এর বিমান বাহিনী ৮৫টা ফাইটার পাঠায় পাকিস্তানের ভেতরে ভারত-এর মধ্যে থেকেই মিসাইল আঘাত করতে। ৯টা অসামরিক অঞ্চলে মিসাইল আঘাত হানে। ভারত সরকার এই অসামরিক অঞ্চলগুলোকে (যার মধ্যে আছে মাদ্রাসা ও মসজিদ) সন্ত্রাসীদের আস্তানা বলে। পাকিস্তান ৩টে জায়গায় আঘাতের কথা স্বীকার করে এবং এই অঞ্চলগুলোকে সাধারণ মানুষের অঞ্চল বলে। পাকিস্তান ৮৫টা ভারতীয় ফাইটারকে আটকাতে ৪০টা ফাইটার পাঠায়। পাকিস্তান দাবী করে তারা ৩টে ভারতীয় রাফাল, ১টা শু আর একটা মিরাজ বিমান ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে। ভারত এই দাবী স্বীকার বা অস্বীকার কিছুই করেনি। এবং ভারত কোনও পাকিস্তানী বিমান ভূপাতিত করার দাবী জানায়নি। পাকিস্তান আরও জানায় যে তারা চীনের তৈরি জে১০সি বিমান দিয়ে ফ্রান্সের তৈরি ৩টে রাফাল ভূপাতিত করতে পেরেছে। পাকিস্তানের দাবী সঠিক হলে রাফাল বিশ্বে প্রথম কোথাও বিমান যুদ্ধে ভূপাতিত হল। এর পরেই দেখা যায় রাফাল বিমান নির্মাতা কম্পানী "দেশো"-র শেয়ার মূল্য-এ ধ্বস নামে ও জে১০সি নির্মাতা "চেংদু এভিসি" কম্পানীর শেয়ার মূল্য ৪০% বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও "মারটিন বেকার" কম্পানী যারা পশ্চীমা সমস্ত ফাইটারের পাইলটের সিট নির্মাণ করে, তারা জানায় যে ওই দিন তাদের তিনটে পাইলট সিট ধ্বংস হয়েছে (সোর্স কোড বা সফটওয়ের ব্যবহার করে বোঝা যায় সিট ধ্বংস হল)। পাকিস্তান জানায় জে১০সি, চীনা পি এল-১৫ মিসাইল ও চীনা বেইদাউ স্যাটেলাইট নেভিগেশন ব্যবহার করে (চীনা বেইদাউ মার্কিন জিপিএস-এর চেয়ে ভালো কাজ করে কারণ জিপিএস ব্যবহার করে পুরনো ৩৮টা স্যাটেলাইট আর বিদাউ ব্যবহার করে নতুন ৪৪টা স্যাটেলাইট যা শিঘ্রই ৫০টা স্যাটেলাইট হবে) ভারতীয় রাফাল ভূপাতিত করা হয়েছে। পাকিস্তান আরও জানায় যে তারা ভারতের ১৫টা বিমান লক করতে পেরেছিল অর্থাৎ তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ ব্যবহার করে ১৫টা বিমানকে তারা অচল করে দেয় এবং রাফালের র‍্যাডারের আওতার বাইরে থেকে ৫টা পি এল ১৫ মিসাইল ছুড়ে ৫টা (যার মধ্যে ৩টে রাফাল) বিমান ধ্বংস করে। তারা ১৫টা বিমান ভূপাতিত করেনি কারণ তারা যুদ্ধ-কে আরো খারাপ জায়গায় নিয়ে যেতে চায়নি। মনে রাখা দরকার ভারত সেনবাহিনীও ৯টা আঘাতের কথা বলে জানায় তারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওপর কোনও আঘাত আনেনি কারণ তারা যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে চায়না।

এবার প্রশ্ন ৮৫টা ভারতীয় ফাইটার মাত্র ৯টা মিসাইল মেরেছিল কেন? না কি ৮৫টা মিসাইলের মাত্র ৯টা আঘাত হানতে পেরেছিল আর বাকিগুলোকে পাকিস্তানের চীনা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এইচ কিউ ১৫ ধ্বংস করে দিয়েছিল। পাকিস্তান অবশ্য তেমন কিছু জানায়নি। তাহলে ৮৫টা ফাইটার গেল কেন? অনেকে বিশেষজ্ঞ জানিয়েছে আসলে সামনে্র সারিতে থাকা ভারতীয় ফাইটারগুলোকে লক করে ফেলেছিল পাকিস্তান আর তাই পেছনের ফাইটারগুলো আর সামনে যায়নি। যদি প্রথম সারির ফাইটারগুলো লক না হত তাহলে অনেক বেশি মিসাইল আঘাত হানত পাকিস্তানের ভেতরে।

প্রথম দিনের যুদ্ধ শেষে বোঝা যাচ্ছিল ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তানের ভেতরে আঘাত হেনেছে এবং পাকিস্তানী বিমান বাহিনী পালটা প্রত্যাঘাত করেছে। আস্তে আস্তে আন্তর্জাতিক গণ মাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যম থেকে বোঝা যাচ্ছিল পাকিস্তান কিছু ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে এবং এর মধ্যে কম্পক্ষে একটা রাফাল। কিন্তু ৯ই মে ভারত সরকার দাবী করে যা পাকিস্তান ড্রোন ও মিসাইল দিয়ে দিয়ে আঘাত করেছে ভারতের অভ্যন্তরে কিন্তু ভারতের এয়ার দিফেন্স সিস্টেম এস-৪০০ পাকিস্তানের সমস্ত ড্রোন ও মিসাইল ধ্বংস করে দিয়েছে। পাকিস্তান ভারতের এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানায় পাকিস্তান এখনো কোনও ওপারেশন শুরু করেনি এবং যখন করবে বিশ্বকে জানিয়ে করবে। ভারত অবশ্য দাবী করে তারা পাকিস্তানের আঘাতের বিরুদ্ধে প্রত্যাঘাত করছে। ভারত দাবী করে ইসরাইলী ড্রোন হারপ ব্যবহার করে তারা বহু পাকিস্তানী সেনার আস্তানায় বহু শহরে আঘাত হেনেছে। এবং লাহোরের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এইচ কিউ ১৫ ধ্বংস করে দিয়েছে। পাকিস্তান জানায় তুর্কিয়ে নির্মিত কোরেল-জাত তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ দিয়ে ৯০টা হারপ ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে এবং কেবল একটা লাহোরে আঘাত হানতে পেরেছে আর তাতে তিন সেনা আহত ও এক সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে। ১০ই মে দুই দেশের মিডিয়া অনেক অস্বাভাবিক দাবী জানায় যার অধিকাংশই পরের দিন মিথ্যে বলে প্রমাণিত হয়।

১১ই মে পাকিস্তান তাদের অপারেশন শুরু করে বিশ্বকে জানিয়ে। তারা দাবী করে ফাতেহ মিসাইল দিয়ে তারা ভাতিন্দায় একটা ব্রাক্ষস মিসাইলের ভাণ্ডার ধ্বংস করে দিয়েছে, অধোমপুরে এস-৪০০ ধ্বংস করে দিয়েছে। এছাড়াও অনেক বিমান ঘাটিতে আঘাত হেনেছে। ভারত সরকার পালটা অনেক পাকিস্তানী বিমান ঘাটিতে প্রত্যাঘাত করে। ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই দাবী করে যে তাদের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম শ্ত্রু মিসাইল আকাশেই ধ্বংস করে দিয়েছে।

এরপরেই মার্কিন রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প টুইট করে জানায় যে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধে বিরতী হয়েছে। পাকিস্তান জানায় ভারত মার্কিন সরকারকে যুদ্ধ বিরতি করতে অনুরোধ করেছে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মোদী জানায় যে পাকিস্তান ভারতকে যুদ্ধ বিরতি করতে অনুরোধ করে। মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সি এন এন জানায় যে ভারত মার্কিন সরকারকে জানায় যে পাকিস্তান পরমাণু বোমা-এর কমিটির মিটিং ডেকেছে আর তাই মার্কিন সরকার যেন পাকিস্তান-কে আটকায়। মার্কিন বিশেষজ্ঞ-রা জানায় পাকিস্তানের ফাতেহ মিসাইল সত্যি সত্যি এস-৪০০ ও ব্রাক্ষস মিসাইল ভাণ্ডার ধ্বংস করতে পেরেছে দেখে ভারত যুদ্ধ বিরতিতে যেতে বাধ্য হয়েছে। ট্রাম্প পরে জানায় যে সে না কি বাণিজ্য কমিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ভারত ও পাকিস্তানকে যুদ্ধ বিরতিতে বাধ্য করেছে।

৭ই মে-র বিমান যুদ্ধে পাকিস্তানের বিজয় বিশ্ব জুড়ে স্বীকৃত হোলেও, ৯ই মে ,১০ই মে ও ১১ই মে-র মিসাইল যুদ্ধের ফলাফল ঠিক পরিস্কার নয়। মোদী অধোমপুরে গিয়ে পেছনে এস-৪০০-র ছবি দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন যে পাকিস্তানের দাবী মিথ্যে। পাকিস্তান ডিজিটাল সিগনেচার প্রকাশ করে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে যে ৯ই মে-র ভারতের অভ্যন্তরে ঘটা ড্রোন ও মিসাইল আঘাত পাকিস্তানের কাজ নয়। লাহোরের সমগ্র এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ধ্বংস করার ভারতীয় দাবীর পক্ষে বা বিপক্ষে সেরকম প্রমান পাওয়া যায়নি।

তবে বিষ্ময়ের বিষয় মার্কিন রাষ্ট্রপতি ভারত পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি প্রথম ঘোষণা করে। পাকিস্তান মার্কিন মধ্যস্ততার কথা স্বীকার করলেও ভারত মার্কিন মধ্যস্ততাই স্বীকার করেনি। মোদীর মতে পাকিস্তানের অনুরোধে যুদ্ধ বিরতি হয়েছে, মার্কিন মধ্যস্ততার কথাই সেখানে নেই। পাকিস্তান ও মার্কিন সংবাদমাধ্যম বলছে ভারত-ই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছে যুদ্ধ বিরতিতে মধ্যস্ততা করতে। একথা বলাই যায় যে প্রথম দিনের ভারতের আঘাত ও পাকিস্তানের প্রত্যাঘাতের দাবীর মধ্যেই দুই দেশের সেনাবাহিনীর কেউ-ই যে যুদ্ধ-কে বেশি দূর টেনে নিয়ে যেতে রাজি নয় তা বলে দিয়েছিল। দুই দেশই একটা সীমিত গণ্ডির মধ্যে থেকে যুদ্ধ করতে চেয়েছে। প্রথম দিনের বিমান যুদ্ধে পাকিস্তান এগিয়ে যাওয়ায়, ভারতের ওপর চাপ এসে পরে মিসাইল ও ড্রোন যুদ্ধে নিজেদের প্রমাণ করার। আমার মতে ভারত সরকারের উচিত ছিল মিসাইল ও ড্রোন যুদ্ধে বিশ্বের স্বীকৃতি আদায় করা অবধি যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া। যদি ধরে নেওয়া যায় যে পাকিস্তানের মিসাইল আঘাতের ভয়াবহতা বা পাকিস্তানের পরমাণু বোমা কমিটি-কে সক্রিয় হতে দেখে ভারত সরকার ভয় পেয়ে যুদ্ধ বিরতি করেছে তবে এই যুদ্ধে ভারত-কে সম্পূর্ণ পরাস্ত বলতে হয়। আর যদি ধরে নেওয়া যায় যে ভারতের মিসাইল ও ড্রোন আঘাতের ভয়াবহতা দেখে পাকিস্তান যুদ্ধ বিরতি চেয়েছে তাহলেও ভারতের যুদ্ধ বিরতিতে যাওয়া ভারতের পরাজয়। কারণ তাহলে বলতে হয় পাকিস্তান-কে সম্পূর্ণ রূপে পরাস্ত করার সুযোগ হাতছাড়া করাও পরাজয়। আর তা যদি মার্কিন চাপে হয় তবে তা ভারতের পক্ষে বিশাল কূটনৈতিক হার।

এই যুদ্ধের ফলে ভারতীয় বিমান বাহিনীর দুর্বলতা সামনে চলে এল। এই যুদ্ধ চীনা যুদ্ধ বিমানকে উন্নত পশ্চীমা যুদ্ধ বিমানের বিরুদ্ধে জয়ী ঘোষণা করল। ফলে বিশ্ব অস্ত্র ব্যবসায় চীন বিশাল্ভাবে লাভবান হতে চলেছে। ফলে বিভিন্ন দেশের সাথে প্রতিরক্ষা চুক্তির সুযোগও চীনের বাড়বে। ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ব-এর প্রধান নিরাপত্তা প্রদানকারী দেশ হিসেবে যে অবস্থান তাও ধরাশায়ী হয়ে যেতে পারে। হয়তো চীনা বিমানের সাফল্য পর্যালোচনা করেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তান-কে যুদ্ধ বিরতিতে যেতে বাধ্য করেছে। কারণ এই যুদ্ধ আরও এগোলে যদি চীনা অস্ত্র আরও কেরামতি দেখায় তাহলে মার্কিন অস্ত্র ব্যবসায় বিরাট বিপর্যয় নামতে বাধ্য।

শেষে বলা যায় ভারতের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পেহেলগাও সন্ত্রাসীদের সাথে যোগ-এর প্রমাণ বিশ্বের সামনে তুলে ধরা উচিত ছিল। এটা না করায় যুদ্ধের আগেই কূটনৈতিক দিকে ভারত পিছিয়ে পড়েছিল। ফ্রান্সের কাছ থেকে রাফাল-এর সোর্স কোড না নিয়ে রাফাল-কে চীনা জে১০সি-র মুখোমুখি দাঁড় করানো বড়ো ভুল। কারণ পাকিস্তান-কে চীন জে১০সি-র সোর্স কোড প্রথম থেকেই দিয়ে রেখেছে। প্রথমেই ইসরাইলী হারপ ড্রোন দিয়ে আঘাত করলে হয়তো ভালো হোত। কারণ হারপ খুব কম উচ্চতায় ওড়ে বলে তার বিরুদ্ধে যে কোনও এয়ার ডিফেন্স অকার্যকর থাকত। আর তুর্কি কোরেল তড়িৎ চুম্বকিয় তরঙ্গ সব আটকাতে পারতনা যদি এক সাথে অনেক বেশি হারপ ড্রোন ব্যবহার করত। বেশি সংখ্যায় ব্রাক্ষস মিসাইলও সরাসরি মিসাইল সাইট থেকে নিক্ষেপ করলেও পাকিস্তানের চীনা এয়ার ডিফেন্স এইচ কিউ ১৫ সমস্ত মিসাইল আটকাতে পারতনা। পাকিস্তান হয়তো তখন বিমান দিয়ে কিছু প্রত্যাঘাত করত। তাতে কিছু ক্ষয়ক্ষতি হোলেও পাকিস্তান-কে বিজয়ী ভাবা হতনা আন্তরজাতিক গণমাধ্যমে। আর প্রথমে যখন ভুল হয়েছে তখন লড়াই দীর্ঘ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী-কে নাস্তানাবুদ করার কথা ভাবা উচিত ছিল। যুদ্ধ দীর্ঘ হলে ভারত ও পাকিস্তানের উভয়েরই অর্থনৈতিক ক্ষতি হত। যেমন ভারতের পুঁজির বাজার থেকে ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের বিনিয়োগ চলে গেছে এই যুদ্ধের সময়ে। কিন্তু ভারত-এর ৭০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রিসার্ভ আছে। তাই ভারত ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার-এর বিনিয়োগ চলে গেলেও টিকে থাকত। পাকিস্তান কি পারত এত চাপ নিতে?

যুদ্ধে যাওয়ার আগে মাথায় রাখা উচিত ছিল যে পাকিস্তানের বিমানবাহিনী পাকিস্তানের শক্তির জায়গা আর পাকিস্তানের অর্থনীতি পাকিস্তানের দুর্বল জায়গা। তাই এক মাস ব্যাপী যুদ্ধ করে ভারতের উচিত ছিল বেশি অর্থনৈতিক ক্ষতি স্বীকার করার ক্ষমতা দিয়ে পাকিস্তানকে পরাজিত করা। বিমান বাহিনী দিয়ে যুদ্ধ শুরু করে মাত্র ৪ দিনেই যুদ্ধ শেষ করে দিয়ে ভারত সরকার বড়ো ভুল করল। চীন-মার্কিন ঠাণ্ডা যুদ্ধে ভারত চীনকে অনেক এগিয়ে দিল কারণ এই যুদ্ধে নিজেদের অস্ত্রের বিজ্ঞাপন করে চীন মার্কিন অস্ত্র ব্যবসায়েও ভাগ বসাতে চলল। চীনের শক্তি বাড়া মানেই পাকিস্তানের শক্তি বাড়া। বাংলাদেশের জুলাই অগাস্ট বিপ্লবের পরে এবং মালদ্বীপে মুইজু ক্ষমতায় আসার পরে বিশ্ব বুঝে গেছিল যে ভারত দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। এখন ২০২৫-এর মে মাসের ৪ দিনের যুদ্ধের ফলে ভারত দক্ষিণ এশিয়াতে সামরিকভাবেও নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করে ফেলল। সামনের দিনে চীন পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা-কে ব্যবহার করে আরও বড় আঘাত করবে ভারতের ওপর। ভারতের উচিত পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ বিরতি না করে দীর্ঘ মেয়াদী যুদ্ধ করা। পাকিস্তান-কে চীন উন্নত প্রযুক্তি ও সমরাস্ত্র দিতেই থাকবে। ভারত চীনের সাথে পারবেনা। তাই ভারতের উচিত পাকিস্তানকে দীর্ঘ দিন ধরে যুদ্ধে টেনে এনে তার অর্থনীতিকে শেষ করা। কারণ অর্থনীতি ছাড়া ভারত পাকিস্তানের চেয়ে কোথাও এগিয়ে নেই।

Author: Saikat Bhattacharya


You may also like