
"আমাদের বহুজাতিক রাষ্ট্র ভারতে আবার ও ভাষার বিবাদ চরমে উঠে গেছে। অতীতের মতো এবারও ঘটনার সূত্রপাত ঘটা শুরু হয় ওড়িশায় বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর নির্যাতনে, প্রথম প্রথম 2014 এর পর হঠাৎ হিন্দুত্ববাদ চাগার দিয়ে উঠা পশ্চিম বাঙালি হিন্দুরা পশ্চিম বাংআলীরা মার খেয়েছে বলে নিরব সুখ উপলব্ধি করলেও এর পরবর্তীতে তাদের জাতভাই ও তুলসী মালা গলায় থাকার পরেও মার খেয়েছে এটা বুঝে না পারছে হজম করতে আর না পারছে বলতে।
পশ্চিম বাঙালি হিন্দুদের এখন শাঁখের করাত চলছে তার কারণ তারা তাদের বাঙালিত্বের অধিক প্রকাশ করলেই তাদেরকে আরো বেশি "বাংলাদেশি" তকমা দেওয়া হতে পারে।
অন্যদিকে হিন্দুত্ববাদী হয়ে উঠার পরে পশ্চিম বাংআলীরাও ক্ষেপে আছে।
পশ্চিম বাঙালি শুধু উড়িষ্যায় নয় গুজরাট, মহারাষ্ট্র সব জায়গাতেই শুধুমাত্র বাংলাভাষী বলে বাংলাদেশি হবার মিথ্যা তকমা পাওয়ার সাথে সাথে এদেশের বিএসএফ দ্বারা বাংলাদেশেও পুশব্যাক হয়ে গেছে আবার অবশ্য বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর কূটনৈতিক তৎপরতায় অনেকেই স্ব স্ব ভূমিতে অনেকেই ফিরে এসেছে।
দুদিন আগেই কোচবিহারের এক বাসিন্দার কাছে আবার এন আর সির নোটিশ ও এসেছে।
ওদিকে গুজরাটি -মারাঠা, মারাঠা-হিন্দি বিতর্ক ও চাগার দিয়ে উঠেছে।
মারাঠিদের সাথে গুজরাটিদের এই কলহ অবশ্য নতুন নয়।
দেশভাগের পর পর গুজরাটি মারাঠি দাঙ্গার ফলেই বৃহত্তম বোম্বে প্রদেশ ভাগ হয়ে বোম্বে ও গুজরাটে পরিণত হয়ে দুটো ভারতীয় রাষ্ট্রের অঙ্গপ্রদেশ হয়ে আজো ভারত ইউনিয়নে রয়েছে।
গুজরাটিদের সাথে মারাঠাদের এই ভাষাভিত্তিক ঝামেলা যেটা আই ওয়াশ তার প্রকৃত কারণ হচ্ছে ভারতের বানিজ্যিক রাজধানীর অর্থনীতির ধারক ও বাহক ধীরে ধীরে গুজরাটিরা হয়ে গেছে।
অবশ্য কিছু মারোয়ারি ও আছে।
মারোয়ারি-গুজরাটি সমিল্বিত লবিং মূলত অর্থনৈতিক দখলদার হওয়ার পাশাপাশি সংস্কৃতির ও দখল নিতে চায়,ওরা মনে প্রাণে সব জায়গাতেই তাদের নিরামিষ খাদ্যাভ্যাস, নিরামিষ উপাসনা পদ্ধতির অনুপ্রবেশ ইতিমধ্যেই করিয়ে দিয়েছে।
কিন্তু তার পরেও যারা তাদের পায়ের তলায় দাসত্ব করে নি তারা প্রতিবাদ তো করবেই।
অবশ্য মারাঠারা বাঙালিদের ও বাংলাদেশি বলে খেদাচ্ছে।
তার কারণ বাঙালি আজ দূর্বল, ধর্ম ও জাতির নামে বিভক্ত।
অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী না থাকলে এই যুগে সবাই লাথাবে।
ওদিকে দ্রাবিড় ভূমির তামিলনাড়ুর মূখ্যমন্ত্রী তো স্বায়ত্তশাসন চাইছেন, নিজেদের হিন্দি হীন মুদ্রা চাইছেন।
ওদের জোর করে হিন্দি বলানোর চেষ্টা হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করছে।
ভাষাগত বিবাদ ভারতে আগে হলেও এখন কিন্তু অন্যভাবে হচ্ছে।
একজন ভারতীয়র ভারতের যেকোন প্রান্তে বসবাসের,ধর্ম পালনের যে সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে সেটা যে খর্ব হচ্ছে তার উত্তম প্রমাণ বাঙালিদের উপর ভারতের বিভিন্ন অবাঙালি রাজ্যের নির্যাতন।
অবশ্য এতোকিছু হবার পরেও পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী দু একটা কথা বলা ছাড়াও কিছু বলছেন না কারণ এটা তো বিশ্ববাংলা! ভারতের বাঙালি বিভিন্ন জায়গায় মার খেলেও পশ্চিমবঙ্গে সবার মাথা গোঁজার ঠাঁই দিয়ে আমাদের আতিথেয়তার প্রমাণ তো দিতেই হবে।সেই প্রমাণ দিতে গিয়েই কিন্তু 1947-2025 এর মধ্যেই এরাজ্যের সকল অবাঙালি মারোয়াড়ি-গুজরাটির শতকরা হার 3% থেকে মোটামুটি 15% আমরা করেই ফেলেছি।
ওদিকে আসামে 40% মুসলমানদের উপর ষ্ট্রীমরোলার চলছেই কারণ 51% হয়ে গেলেই অসমীয়াদের রাজত্ব নাকি খতম হয়ে যাবে।
সব থেকে বড় কথা বিজেপি ক্ষমতায় আসলেই বারবার হিন্দু রাষ্ট্রের যে সপ্ন দেখায় সেটা যে আদতে হিন্দিভাষী ভোটব্যাঙ্ক ডমিনেটিং এবং মারোয়াড়ি -গুজরাটি হিন্দু ইকোনমিক লবিং এর রাষ্ট্র হবে এটা ভারত রাষ্ট্রের বেশিরভাগই হঠাৎ বেশি হিন্দু হয়ে যাওয়া ম্লেচ্ছ বাঙালি হিন্দু বুঝতে চাই না।
চাই না বলেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন বাঙালি ছাত্রীদের বাংলাদেশি বললেও এদের অন্তর্দহন হয় না, অন্তর্দহন হয় না এতগুলো বাঙালিকে বাংলাদেশি তকমা দিয়ে দেওয়ার পরেও।
বহুজাতিক ভারত রাষ্ট্রে আমরা বাঙালিরা "জনগন মনো ","ভারত মাতা," এতো বলিদান দিয়েছি আর নেতাজি .... ইত্যাদি পুরানো আবেগ আর বর্তমানের বাস্তবতার ধারেকাছে না থাকা বাঙালি হিন্দু ক্ষয়িষ্ণু এটা সত্য কিন্তু এদের যে ভারত রাষ্ট্রের ভোটব্যাঙ্কের শক্তি কমে গেছে,কমে যাচ্ছে এটা বোঝার বোধদয় এদের নেই।
থাকলে তারা মাঠে নামতো, অবশ্য যাদের টি এফ আর (মোট প্রজনন ক্ষমতা) 1.3 তারা মাঠে নামানোর জন্য ছেলেও বা কোথায় পাবে??????।
ভারতকে বহুজাতিক বলেছি বলে এই লেখা পড়ে 2014 এর পর বিশ্ব হিন্দুত্ববাদের ধারক ও বাহক বনে যাওয়া বাঙালি হিন্দুরা আমার উপর নারাজ হবেন তবে আপনাদের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আপনাদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করতে বলবো আদৌও ভারতের সব হিন্দু এক ও অভিন্ন?????।
আপনি সবাইকে এক ভাবলেও ওরা আপনাদের এক ভেবেছে কখনো,ভাবছে এখনো?????।
নাকি বাংলা বলেন বলে "বাংলাদেশি" ভাবে আপনাকে.…?????।
সবথেকে বড় কথা আপনাদের এই অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হলো কেন সেটা একবার ভেবেছেন । গুজরাটি -মাড়োয়ারি-মুম্বাই-চেন্নাই এর আলাদা আলাদা লবিং কি করে আপনাদের ষ্টেটের শিল্প ওদের ওখানে নিয়ে গেল সেটা নিয়ে আবার পরেই বলবো।
আপাতত সবাই মাঠে নামুন,নইলে ডি-ভোটার হয়ে ডিওটেশন ক্যাম্পে যাওয়ার জন্য রেডি হোন।"
Author: Prosenjit Dey