
অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বুঝুন, বৈধ উদ্বাস্তুদের বা শরণার্থীদের জন্য দেশে চালু আছে সি এ এ ২০১৯।
অসচেতনতার কারণে প্রায় সব অবৈধ বিদেশি ই (বাংলাদেশি, পাকিস্থানি ) নিজেকে বৈধ প্রমাণ করতে পারেন নি।
আবার তথাকথিত “ সি এ এ “ তেও আবেদন করেন নি তারা “ দামাল বাংলা “ ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা শুনে। ফলত হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকারের “ বাঙালিদের দাস “ বানানোর প্রকল্প পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।
এবার ওরা এনেছে “ সার “ বা “ S I R “ বা স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন। আইনত এটার কাজ হচ্ছে, মৃত ভোটার, একাধিক কেন্দ্রে নাম থাকা ভোটার, এক কথায় ভুয়ো ভোটার গুলো বাতিল করে, নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি করা। যা সারা বছর ধরেই করে থাকে নির্বাচন কমিশন। আর এটা শুরু হয়েছে, ১৯৫২ সালে ভারতের প্রথম ভোটার তালিকা প্রকাশ হবার পরে থেকেই।
কিন্তু তথাকথিত CAA এর মাধ্যমে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ধরতে না পেরে ওরা এবার ব্যবহার করছে S I R কে। এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ভারতীয় নাগরিকদের জন্য। অবৈধদের জন্য নয়।
একজন বিদেশী যদি ভারতে বসবাস করতে চায় পাকাপাকি ভাবে, তাহলে প্রথমেই তাকে ভারতের আইন মেনে, ভারতের নাগরিক হতে হয়। এর পর সংবিধানের ৩২৬ ধারা অনুযায়ী তাদের ভোটাধিকার অর্জন করতে হয়, এক বিশেষ প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে।
তারমানে S I R এ যে ১১ টি ডকুমেন্ট ও ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকাকে এই কাজ সফল করতে ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটা রাষ্ট্রের একটি কৌশল। যা রাষ্ট্র পরিচালনাকারীরা করে থাকে। যেমন ভাবে তথাকথিত CAA প্রকাশ করার আগে ও পরে দেশের হিন্দু উদ্বাস্তুদের মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছিল বিজেপি । এমনকি হিন্দু - মুসলমানদের মধ্যে তীব্র বিভাজন তৈরিতে চূড়ান্ত ভাবে সফল হয়েছিল তারা।
মোট কথা যে মানুষ ভারতের নাগরিক নন, সংবিধানের ৫ থেকে ১১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে, সেই মানুষের S I R এ চাওয়া ১১ টি ডকুমেন্ট ই ভুয়ো বা জালি। সরকারের অতি উন্নত প্রযুক্তি অতি সহজেই চিহ্নিত করে নিতে পারবে, তথাকথিত অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের। সে ক্ষেত্রে আবেদনকারী অনুপ্রবেশকারী যদি নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট ছাড়া ভারত সরকারের দেওয়া আরো ১০০ টি ডকুমেন্ট জমা দেয়, তাতেও তিনি ধরা পড়ে যাবেন সরকার যদি চায়।
২০০২ সালের ভোটার তালিকার “ মাহাত্ম্য। “
( ক ) বর্তমানে বিজেপি বিধায়ক কবিয়াল অসীম সরকারের হিসাবে “ প্রায় ১ কোটি মতুয়া নমঃশূদ্র ভোটারের নাম বাতিল হতে পারে ২০০২ এর তালিকায় নাম না থাকার কারণে। “
ফলে এই এক কোটি মানুষের সন্তান সন্ততিরাও বে নাগরিক।
( খ ) যে মানুষটি ২০০২ সালে বা তার আগে অবৈধ পথে ভারতে ঢুকেছেন এবং টাকা খরচ করে ভোটার কার্ড কিনে নিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন, তিনি মনে করছেন, তিনি বুঝি ভারতের নাগরিক। বাস্তব কি তাই!
না, অমরা জানি সরকার ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৭১ সালের ভোটার তালিকা প্রকাশ করে দিয়েছে ওয়েবসাইটে। সুতরাং নির্বাচন কমিশন ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকা প্রত্যেক ব্যক্তির পূর্বপুরুষের নাম ১৯৫২ সালের ভোটার তালিকায় আছে কিনা দেখে নিতে পারবে। এক কথায় অনুপ্রবেশকারীদের লুকোচুরি বন্ধ করে,এবারই তাদের সাবার বা নিকেশ করে দিতে চায় দেশের হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার।
# তবে শুধু মাত্র উদ্বাস্তু হিন্দুদের রাষ্ট্রহীন করাটাই বিজেপির একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। বিজেপির আরো উদ্দেশ্য হচ্ছে,অসংখ্য প্রকৃত ভারতীয়দের ও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া। তাই আসল রোগটা না ধরে রোগের উপসর্গ সারিয়ে তোলা বা আপাতত সুস্থ করার ভাবনা সঠিক ভাবনা হবে না। আমার মতে S I R বিরোধী আন্দোলনকারী নেতাদেরও ভাবতে হবে গভীর ভাবে। মনে রাখতে হবে S I R একটি সংবিধান অনুসারে আইনি প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, দেশের হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার, বাংলার বেশির ভাগ জমির দখল নিতে চাইছে, বাংলা ভাষাকে ধ্বংস করতে চাইছে,বাঙালিদের এক বিরাট সংখ্যক মানুষকে “ সস্তা শ্রমিক “ বানাতে চাইছে। সঙ্গে ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাওয়া কোটি কোটি মানুষদের জায়গায় অবাঙালি গুজরাটি, মারাঠি, মাড়োয়ারিদের ঢুকিয়ে দিতে চাইছে।
ফলত, বলা যেতেই পারে এক ভয়াবহ যুদ্ধে ঢুকে গেছে প্রত্যেকটি বাঙালি।
এই যুদ্ধের দুটি পক্ষ, দেশের মাড়োয়ারি গুজরাটি মারাঠি পুঁজি, সঙ্গে সাম্রাজ্যবাদী কর্পোরেট পুঁজি একসঙ্গে, বনাম ভারতকে ব্রিটিশদের হাত থেকে স্বাধীন করার প্রধান জাতি বাঙালি।
তাই ধনী দরিদ্র ধর্ম বর্ণ সব কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে আমাদের লড়াইয়ের ময়দানে নামতেই হবে। কারণ,ধূর্ত হিন্দুত্ববাদী বিজেপি তথাকথিত সি এ এ এর মাধ্যমে কোটি কোটি “ উদ্বাস্তু হিন্দুকে নাগরিকত্বের প্রলোভন দিয়ে খাঁচায় ঢোকাতে অনেকটা বেশী সময় নিয়ে ফেলার ফলে তাদের পিছনে “ দামাল বাংলা “ ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত “ ফেউরা লেগে গিয়েছিল। তাই তারা জনগণকে আর ভাবার সময় না দিয়েই তড়িঘড়ি “ S I R “ করে তাদের পরিকল্পনা সফল করতে চাইছে। -চিন্তা নেই, তথাকথিত CAA এর মতোই, “ S R I “ তেও বাঙালি জল ঢেলে দেবে। দেবেই। প্রয়োজনে শুরু হবে আবার স্বাধীনতার লড়াই।
মানিক ফকির
দামাল বাংলা
১৬/৮/২০২৫
9836327536
Author: মানিক ফকির