বাংলাদেশ শক্তিশালী উৎপাদন ব্যবস্থা আপাতত বানাতে পারবে না, এখন তারা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিক: ভুরাজনীতিকে নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসা

25-July-2025 by east is rising 27

বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশের কাছে কমিউনিজম এর অর্থ হল নাস্তিক্যবাদ। কিন্তু নাস্তিক্যবাদ কমিউনিজম-এর কোন বুনিয়াদি জিনিস নয়। মার্কস শুধু এইটুকুই বলেছে যে মেশিন ভিত্তিক উৎপাদন ব্যবস্থা একসময় এতটাই স্বয়ংক্রিয় হয়ে যাবে যে চাকরি করে মজুরি পাওয়ার সিস্টেমটাই অকার্যকর হয়ে যাবে। কারণ চাকরির সংখ্যা অনেকটা কমে যাবে। ফলে অধিকাংশ মানুষকে সামাজিক মালিকানার ওপর ভিত্তি করে রোজগার করতে হবে। স্বয়ংক্রিয়তা সে সেদিকেই যাচ্ছে সেটা এখন স্পষ্ট। যাতে সামাজিক মালিকানার উপর ভিত্তি করে সমস্ত মানুষ বেঁচে থাকার সুযোগ পায় এটা ইনসিওর করাই কমিউনিস্টদের কাজ। এটা একদিনে হয় না। এর জন্য স্বয়ংক্রিয়তাকে আস্তে আস্তে উচ্চ লেভেলে নিয়ে যেতে হয়। এই যাত্রাপথকে আমরা সমাজতন্ত্র বলি। শেষে এমন একটা দিন আনার সংকল্প যেখানে মানুষের করতে ভালো লাগেনা কিন্তু সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এমন কাজগুলো স্বয়ংক্রিয় মেশিন করবে আর মানুষ কেবল এমন কাজ করবে যেটা তার করতে ভালো লাগে। যেহেতু সে করতে ভালো লাগা কাজ করছে আস্তে আস্তে একটা সময় সে আর কাজের জন্য বিনিময় মূল্য আর চাইবে না। ফলে মানি মোটিভেসন অকার্যকর হয়ে যাবে। নাস্তিক অথবা আস্তিক হওয়ার সঙ্গে কমিউনিজম-এর কোন সম্পর্ক নাই।

কিন্তু বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশ এইসব বিষয় বোঝেনা। আসলে তাদের কোন অর্থনৈতিক চিন্তা ভাবনাই নেই। তারা অনেকে ইসলামকে কেন্দ্র করে চিন্তা করার চেষ্টা করে। কিন্তু শক্তিশালী দেশ হিসেবে কোনও ইসলামিক অর্থনীতি খুঁজে পায় না। সেই জন্য শেষ পর্যন্ত তারা আমেরিকার বাইবেল বেল্ট-কে নিজেদের আইডল ভাবে। সেই বাইবেল বেল্ট যা ভয়ংকর ভাবে শ্বেতাঙ্গবাদী। যারা বিশ্বাস করে অশ্বেতাঙ্গদের বেঁচে থাকার কোন অধিকার নেই। বাংলাদেশের এই অংশটা মনে করে যে খ্রিস্টানরা বোধ হয় মুসলমানদের অপেক্ষাকৃত নিকটবর্তী আদর্শগত আত্মীয়। কারন দুজনেই আব্রাহামেক। আর এই জন্যই শেষ পর্যন্ত তারা আমেরিকা-কে ও পশ্চিম-কে অন্ধের মত অনুকরণ করে চলে। এই অবস্থা থেকে বাংলাদেশ খুব সহজে বের হতে পারবে না।

কিছু মার্কিন হেজিমনি বিরোধী মানুষ আছে যারা রাশিয়ার কিছু নীতির মধ্যে ক্রিশ্চান ও মুসলিমদের নিকটবর্তী আত্মীয়তা খুঁজে পান। তবে রাশিয়া যেহেতু মার্কিন অর্থনীতি ও চীনা অর্থনীতির তুলনায় খুব একটা শক্তিশালী নয় এবং রাশিয়া যেহেতু ভারতের দীর্ঘকালীন মিত্র সেই জন্য রাশিয়ার প্রতি ভালোবাসা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের নেই। এদিক থেকে দেখতে গেলে ইসলামপন্থীদের থেকে মুসলমান জাতীয়তাবাদীরা অনেকটাই এগিয়ে। এই জন্যই হয়তো পাকিস্তান চীনের সাহায্য নিয়ে যতটা এগোতে পেরেছে (পরমাণু শক্তিধর হতে পেরেছে এবং উন্নত অস্ত্র নিয়ে ভারতের মতো শক্তিশালী দেশকে কাউন্টার করতে পেরেছে), ইরান রাশিয়া ও পশ্চিমের জায়ানবাদ বিরোধী-দের কাছে গিয়ে ততটাই বোকা হয়েছে।

বাংলাদেশ এভাবেই বর্তমানে একটা ভয়ংকর বৌদ্ধিক সমস্যায় পড়ে গেছে। আমি যা বুঝলাম বাংলাদেশের পক্ষে এই মুহূর্তে উৎপাদন চিন্তা ও অর্থনৈতিক চিন্তা করা প্রায় অসম্ভব। তবে ইসলাম মানুষকে ভালো যোদ্ধা হতে শেখায়। আপাতত যুদ্ধের চিন্তাই করুক বাংলাদেশ। আগামী ১০ বছরের মধ্যে পূর্ব ভারত এবং সমগ্র বাংলা ব-দ্বীপ জুড়ে ভয়ংকর যুদ্ধ ও সামাজিক বিপর্যয় আসতে চলেছে। যুদ্ধ না করে কোন সমাজই শক্তিশালী হয় না। বাঙালি সমাজের জন্য এ ধ্রুব সত্য। 

Author: Saikat Bhattacharya


You may also like