গুজারাতি মাড়োয়াড়ি লুট চলছেই

এই কর্পোরেটদের 99.99%ই হলো বড়  গুজরাটি ও মারোয়ারি ব্যবসায়ী।
মাঝারি আকারের গুজরাটি মারোয়ারী ও কিন্তু এতে অন্তর্ভুক্ত নয়।
অবশ্য গর্বিত ভারতীয়রা এই থিওরি দেখে চোখে পট্টি পরে নেবে।
কিন্তু যেদিন দেশ দেউলিয়া হবে সেদিন এরা বুঝবে, সেইদিন আর বেশি দেরি নয়।
অনলাইন মানি সিষ্টেম কে হাতিয়ার করে সকল লিকুয়িড মানি মোটামুটি বাজার হতে 75% তুলে নেওয়া হয়েছে তারপর সেগুলো অনলাইনে দেখালেও আদৌও  কোষাগারে আছে কিনা কেবা দেখতে যাচ্ছে?।
তারপর সেগুলো গুজরাটি বড় বড় লেভেলের ব্যবসায়ীদের ধার হিসেবে দেওয়া হচ্ছে অবশ্য ধারের কিছু অংশ পদ্মের দলকে দেওয়া হয় কারণ জাতভাই প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিনা,বেপার করার জন্য এই গুজরাটিদের সাথে দহরম মহরম আবার মারোয়ারীদের কারণ দুজাতই ব্যাপার করার জন্য ঘরের ...কে বাজারেও বন্ধক রাখে।
তারপর লোনগুলো নিয়ে ফেঁপে ওঠে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সময়ও জাতভাইদের কিছু অংশ দেয় তারপর ফুরুত...!
নিরব মোদী,বিজয় মালিয়া.…. অসংখ্য নাম কার কার বলবো ?।
হিন্দুত্ববাদের নামে বাকি সব জাতের হিন্দু এগুলো চোখে দেখেও দেখবে না কারণ আফিম-ধর্মের আফিমের নেশা অদৃশ্য তার ঘোর কাটানো বড় মুশকিল।
সুদীর্ঘকাল ভারতের সেনাবাহিনীতে কোন গুজরাটি রেজিমেন্ট কিন্তু নেই,মারোয়ারিও নেই(রাজপুত আলাদা জাত,ওরা ক্ষত্রিয় বেনিয়া নয়)!!!!!
অবশ্য যারা দেশলুট করে এমনকি আত্মস্বার্থে রাজাকে হঠাতে অতীতে বৃটিশদের ডেকে এনেছিল তাদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তোলা দেশপ্রেম নামক শব্দের অপমান ছাড়া আর কিছুই নয়।

Read More

Author: Prosenjit Dey

Social Hindu 24-July-2025 by east is rising

১৯৯৬ (নয়া উদারবাদ শিল্পায়ন বিশ্বায়ন) থেকে ২০২৬ (বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা এনআরসি): গুজরাটি মারওয়ারি পুজির লক্ষ্য একই আছে- বাঙালি উচ্ছেদ

সূচনা
২০০৬ সালে বিপুল পরিমাণে (২৩০/২৯৪) আসন জিতে ক্ষমতায় বসে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে বামফ্রন্ট সরকার। ২০০৬ সালের জয়টা একটু আলাদাই ছিল। এর সবচেয়ে বড় কারণ হলো বাঙালি মধ্যবিত্তের তৎকালীন অভিভাবক আনন্দবাজার পত্রিকা সেইবার বামফ্রন্টের শিল্পায়ন কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়েছিল।

বাঙালি হিন্দু মধ্যবিত্ত ভদ্রলোক 
আনন্দবাজার পত্রিকা সেই সময় বিশ্বায়ন ও নয়া উদারবাদী অর্থনীতির বিশাল বড় সমর্থক (যদিও বিশ্বায়ন কাকে বলে আর বাজার অর্থনীতি কাকে বলে এই সম্পর্কে কোন ধারণাই আসলে আনন্দবাজারের সাংবাদিক ও লেখকদের ছিল না)। তারা বাঙালি হিন্দু মধ্যবিত্ত ভদ্রলোকদের মধ্যে একটা ধারণা তৈরি করেছিল যে কমিউনিস্ট আন্দোলনের ফলে নাকি অতিরিক্ত শ্রমিক আন্দোলন হয়েছে। আর অতিরিক্ত শ্রমিক আন্দোলনের ফলে নাকি সমস্ত শিল্প-পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে চলে গেছে। বাঙালি হিন্দু মধ্যবিত্ত ভদ্রলোকের এই মিথ্যে তথ্যটা খুবই মনে ধরেছিল। ১৯৯০ এর দশকে ঘরে ঘরে টিভি ঢোকে এবং টিভির মধ্য দিয়ে ঢোকে হিন্দি সিনেমা সিরিয়াল ও হিন্দি ভাষার সাংস্কৃতিক আগ্রাসন। বাঙালি হিন্দু মধ্যবিত্ত ভদ্রলোক এই সময় থেকেই প্রসেনজিৎ ঋতুপর্ণা রচনা চিরঞ্জিতের সিনেমা দেখা শ্রমিক ও কৃষকের সঙ্গে সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলে। বাঙালি হিন্দু মধ্যবিত্ত ভদ্রলোক এই সময় থেকেই মারওয়ারী গুজরাটি বিহারীদের আপন আর বাঙালি শ্রমিক ও কৃষককে হীন জীব ভাবতে শুরু করে।

পঃ বঙ্গে শিল্প বিপর্যয়ের কারণ 
পশ্চিমবাংলায় যে সমস্ত শিল্প ১৯৫০ এর দশক থেকে গড়ে উঠেছিল আর অধিকাংশই ছিল কেন্দ্রিয় সরকারের ইমপোর্ট সাবস্টিটিউশন নীতির ওপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ পণ্য উৎপাদনে সাহায্য করত সেই পণ্য উৎপাদন তৈরীর সরঞ্জাম-এর মূল্য ভর্তুকি দিয়ে কম রেখে। আবার ওই পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করলে উচ্চ শুল্ক দিতে হতো। অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের কারখানাগুলোতে এমন পণ্য তৈরি হতো, যেগুলো উৎপাদন করার খরচ বিশ্ববাজারের তুলনায় বেশি আর তাই তার বাজার মূল্য বিশ্ববাজারের তুলনায় বেশি। ফলে ১৯৯১ এর উদারবাদী নীতি শুরু হওয়ার সাথে সাথে বিশ্ব বাজার থেকে আসা আমদানির কাছে সেই সমস্ত পণ্য হেরে যায় এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে বহু শিল্প উঠে যায়। শিল্পগুলো উঠে যাওয়ার আগে মালিকেরা শ্রমিকদের উপর দোষ চাপাবে বলে শ্রমিক নেতাদের পয়সা খাইয়ে আন্দোলন করিয়ে কারখানা বন্ধ করতো। অথবা শ্রমিকদের অনেকদিন কাজ করিয়েও পয়সা দিত না বলে শ্রমিকরা যখন আন্দোলন শুরু করতো, সেই সময় শ্রমিক আন্দোলনকে দোষারোপ করে কারখানা বন্ধ করে দিত মালিকরা। আর বর্তমান ও আনন্দবাজারের মত সংবাদমাধ্যমগুলো বাঙালি হিন্দু মধ্যবিত্ত ভদ্রলোককে বলে দিত শ্রমিক আন্দোলন ও কমিউনিস্ট আন্দোলনের জন্যই পশ্চিমবঙ্গ পিছিয়ে পড়ছে।

জ্যোতি বসু-র নীতি
তবে জ্যোতি বসু ১৯৯০-এর দশকে আনন্দবাজার পত্রিকাকে খুব একটা গুরুত্ব দিত না। উনি জানতেন বাঙালি মধ্যবিত্ত ভদ্রলোকেরা ভোট ব্যাংকের শতাংশে খুবই সামান্য। শহরে ভোট বামফ্রন্ট হারাচ্ছে বটে, কিন্তু গ্রামাঞ্চলের ভোট অপারেশন বর্গার সুফলের জন্য বামফ্রন্টের সাথেই আছে এবং থাকবে। কিন্তু জ্যোতি বসুর সমস্যা ছিল রাজ্য সরকারের রাজস্ব আয়কে বৃদ্ধি করা। যদি রাজস্ব বৃদ্ধি ঠিকঠাক করতে হয় তাহলে অবশ্যই নতুন শিল্প লাগবে। সেই সময় জুট শিল্পকে ধরা হচ্ছিল অস্তগামী শিল্প আর তথ্য প্রযুক্তিকে ধরা হচ্ছিল উদীয়মান শিল্প। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে জায়গা দিতে কলকাতার আশেপাশের অঞ্চলের বিশেষ করে রাজারহাট অঞ্চলের বাঙালি মুসলমান কৃষক উচ্ছেদ শুরু হয়। জ্যোতি বসু এই কাজ কলকাতার আশেপাশেই সীমাবদ্ধ রেখেছিল। তার কারণ ছিল কলকাতার আশেপাশের কৃষকদের মধ্যে শহুরে বিলাস সংস্কৃতি ও জমিকে পণ্য ভাবার প্রবণতা লক্ষ্য করা যেত। সেই জন্য এইসব অঞ্চলের কৃষকরা অনেক কম চাপের মুখেই জমি বিক্রি করে দিত। কিছু লোক জোড় জুলুম নিয়ে লিখলেও কৃষকরা সেভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে ব্যর্থ হত। কারণ কৃষকদের একটা বড় অংশই জমি বিক্রি করে দিত। জ্যোতি বসুর ধারণা ছিল রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য যতটুকু না হলেই নয় ততটুকু জমি অধিগ্রহণ করেই সন্তুষ্ট থাকা।

গ্রামের দিকে বেশি ঢুকতে গেলেই কৃষকদের ভয়ংকর প্রতিরোধের মুখে পড়তে হবে। দক্ষিণ ভারতে জনঘনত্ব অনেক কম। এক হেক্টর কৃষি জমির উপর অনেক কম মানুষ নির্ভর করে। পশ্চিমবঙ্গের সেই তুলনায় অনেক বেশি মানুষ এক হেক্টর কৃষি জমির উপর নির্ভর করে। এর কারণ পশ্চিমবঙ্গের জমি অনেক উর্বর এবং অপারেশন বর্গের ফলে কৃষির বিকাশ। উর্বর জমি এবং অপারেশন বর্গার ফলে পশ্চিমবঙ্গের কৃষক কুল বিশেষ করে বর্গাদারেরা যথেষ্ট খুশি আছে এবং বামফ্রন্ট সরকারকে ভোট দিয়ে যাচ্ছে। অতএব শিল্প নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করার কিছু নেই। এটাই ছিল জ্যোতিবাবুর মত।

আন্দন্দবাজারের অজ্ঞতা 
আনন্দবাজার পত্রিকা জ্যোতিবাবুর এই প্রজ্ঞা বুঝে উঠতে সক্ষম হয়নি। জ্যোতি বাবুকে সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে তুলনা করে, তাকে বাজার অর্থনীতি বিদ্বেষী হিসেবে চিহ্নিত করা শুরু করে আনন্দবাজার। আসলে এটা পশ্চিমবঙ্গের স্বাধীন সংবাদ মাধ্যমের কেবলমাত্র অজ্ঞতার পরিচয় ছিল না, এটা তাদের বিপর্যয়ের একটা বড় কারণও হতে চলেছিল।

ব্র্যাণ্ড বুদ্ধ
জ্যোতিবাবুর পরে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য যখন ক্ষমতায় আসে, তখন থেকেই আনন্দবাজার বলা শুরু করে যে বুদ্ধবাবু নাকি উদারবাদি। এই জন্য উনি নাকি শিল্পায়ন করতে সক্ষম হবেন বুদ্ধবাবু বুমার জেনারেশনের। উনি অন্যভাবে চিন্তা করা শুরু করেন। উনি মনে করতে থাকেন কলকাতার থেকেও অনেক দূরবর্তী জায়গায় শিল্পপতিরা যেই জমি চাক না কেন, উনি সেই জমি শিল্পপতিদের দেবেন। এবং তাহলেই নাকি পশ্চিমবঙ্গে শিল্পায়ন হয়ে যাবে। উনি পশ্চিমবাংলায় যে মুসলমানদের পক্ষে জনবিন্যাস সরছে, এটা উপলব্ধি করেননি। কমিউনিস্টদেরকে যে অনেক বেশি পরিমাণে মুসলমানদের কাছে টানতে হবে, সেটা উনি বোঝেননি। উল্টে বাঙালি দরিদ্র ব্রাহ্মণ সন্তান ধনঞ্জয় চ্যাটার্জিকে মিথ্যে ফাঁসি দিয়ে মারওয়ারি গুজরাটি বিহারী ভোটব্যাঙ্ক নিজের পকেটে করতে চাইলেন। আস্তে আস্তে দেখা গেল বন্ধ শিল্পের জমি, কৃষিজমি, বসতবাড়ি সমস্ত কিছু নিয়ে গুজরাটি মারওয়ারি পুজি কোথাও শপিং কমপ্লেক্স বানাচ্ছে কোথাও আবাসন বানাচ্ছে। কারখানা বলতে যা বোঝায় সেটা অর হচ্ছে না।

নন্দীগ্রামে বাঙালি মুসলমান কৃষকের কীর্তি 
এই ব্যাপার গুলো জ্যোতিবাবুর আমলে ১৯৯৫ থেকেই শুরু হয়েছিল কিন্তু বুদ্ধদেবের আমলে ২০০১ সাল থেকে চোখে পড়ার মতো করে বেড়ে যেতে থাকে। শেষে শিল্পায়ন করবে বলে ২০০৬ সালে যখন বামফ্রন্ট নির্বাচন জিতল, তখন আনন্দবাজার বলল সিপিএম অথবা বামফ্রন্ট জেতেনি, জিতেছে "ব্র্যান্ড বুদ্ধ"। বুদ্ধবাবু আনন্দবাজারের গ্যাস খেয়ে সেই কৃষি সমাজকেই আঘাত করে বসলো যে কৃষি সমাজ বামফ্রন্টকে ক্ষমতায় এনেছিল। এর ফল কি হয়েছিল সকলেরই জানা। সেটা নতুন করে বলার কিছু নেই। কিন্তু এটা বলতে অসুবিধা নেই সিঙ্গুরের বাঙালি হিন্দু কৃষকরা, যেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে অক্ষম হয়েছিল নন্দীগ্রামের বাঙালি মুসলমান কৃষক সেই প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। এবং বলা বাহুল্য কৃষক প্রতিরোধের সামনে যে কর্পোরেট পুঁজি, কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের যুগলবন্দী এভাবে পরাস্ত হতে পারে তা ২০০৯ সালেও ছিল কল্পনারও অতীত। আসলে ১৯৯১তে সোভিয়েত পতনের পর থেকে পুজি ও রাষ্ট্রের যুগলবন্দীর সঙ্গে সমাজের কোন অংশ যে যুদ্ধ করে জিততে পারে তা নন্দীগ্রাম হওয়ার আগে অনেকেই বিশ্বাস করেনি। তৃণমূল সরকার সেভাবে কখনো নন্দীগ্রামকে নিয়ে কোন সিনেমা নাটক করেনি। বাঙালি হিন্দু মধ্যবিত্ত ভদ্রলোকের কাছে নন্দীগ্রাম ছিল কৃষি সমাজের কাছে তাদের পরাজয়। গুজরাটি মারওয়ারি পুজি অবশ্যই একে মনে করেছিল পরাজয়। আমার খুব অবাক লাগে যে নন্দীগ্রামকে ও বাঙালি মুসলমান কৃষকের উজির বিরুদ্ধে সংগ্রামের ইতিহাসকে ক্লাস এইটের ইতিহাস বই ছাড়া কোথাও সেভাবে খুঁজে পাওয়া যায়না।

বিশ্ব পুজিবাদ-এর সমস্যা
তবে এটাও ঠিক ২০০৭ সালের অর্থনৈতিক মন্দার সময় থেকেই এটা বোঝা যাচ্ছিল যে নয়া উদারবাদি অর্থনীতির দিন শেষ হতে চলেছে। পুজির চলাচল অনেকটাই শিথিল হতে শুরু করেছিল দুনিয়া জুড়ে। মার্কিন সামরিক বাহিনী ইরাক ও আফগানিস্তানে ভীষণভাবে পর্যদুস্ত হচ্ছিল। আরব বসন্তের মতো বিষয়গুলো ইঙ্গিত করছিল যে বিশ্ব অর্থনীতিতে মার্কিন প্রভাব কমছে। ২০১১ সালে হেরে যাওয়ার পরেও আনন্দবাজারের অভীক সরকার মশাই ২০১৬ সালে তৃণমূলকে হারিয়ে পশ্চিমবঙ্গের শিল্পায়ন করার একটা শেষ চেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু ২০১৬ সালেও তৃণমূল জিতে যায়। ২০১৬ সালেই ট্রাম্প সরাসরি নয়া উদারবাদি বিশ্বায়নের বিপক্ষে গিয়ে মার্কিন নির্বাচনে জয়ী হয়। ২০১৬ সালে তৃণমূল জেতার পরে অভীক সরকার আনন্দবাজারের প্রধান পদ থেকে পদত্যাগ করে।

আনন্দবাজার ও নয়া উদারবাএর পরাজয়
আনন্দ বাজারের এই হারের কারণ ছিল তারা কোনদিনই সমাজতন্ত্র, বাজার অর্থনীতি, নয়া উদারবাদ, বিশ্বায়ন এই বিষয়গুলো মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করেনি। ২০০৭ এর অর্থনৈতিক মন্দার পরে পুরনো ব্যবস্থা, যা সোভিয়েত পতনের পরে ১৯৯২ থেকে গড়ে উঠেছিল সেটা যে ধ্বংস হয়ে গেছিল। চীন এবার হয়ে উঠতে শুরু করল বিশ্ব অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। বিশ্বায়ন হয়ে উঠল রাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোগত বিনিয়োগের জায়গা। একটা চীনা বাজার সমাজতন্ত্রের সামনে এতগুলো নয়া উদারবাদি দেশ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারল না। চীনের উত্থান যে হতে চলেছে সেটা আর অস্বীকার করা যাচ্ছিল না। এই অবস্থায় আনন্দবাজার আর বিশ্বায়ন ও নয়া উদারবাদের কথা বলতে পারল না। বাঙালি হিন্দু মধ্যবিত্ত ভদ্রলোকেরা বুঝেই উঠতে পারল না কি থেকে কি হয়ে গেল। কারণে অকারণে মমতাকে গালাগালি দেওয়াটাই হয়ে উঠল তাদের একমাত্র কাজ। গুজরাটি মারওয়ারী পুজী কিন্তু নিজের চাল দিয়ে চলল। তারা বুঝতে পারে মমতা ব্যানার্জি যতদিন ক্ষমতায় আছে বাঙালি কৃষক উচ্ছেদ করে জমি হাতানো অসম্ভব।

পঃ বঙ্গে গুজারাতি মারওয়ারি পুঁজির হিন্দুত্ববাদ আমদানী 
গুজরাটি মারওয়ারি পুজি বুঝতে পারে সিঙ্গুর নন্দীগ্রামে কৃষি সমাজের যে ঐক্য ছিল বাঙালি হিন্দু ও বাঙালি মুসলমানের মধ্যে, সেই ঐক্য ভেঙে ফেলতে হবে। ঐক্য ভেঙে ফেলার জন্য মুসলমান বিরোধী বিজেপি পার্টি-কে সামনে আনা শুরু করে গুজরাটি মারওয়ারি পুজি। বিজেপি লাগাতার মুসলমান বিদ্বেষ প্রচার করতে থাকে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে। বাংলাদেশ থেকে অতিরিক্ত হিন্দু ঢুকিয়ে পশ্চিমবাংলায় মেরুকরণ ঘটানো শুরু করে গুজরাটি মারওয়ারি পুজি। ২০১৪ সাল থেকে এই খেলা তারা শুরু করেছে। সেই জন্যই হয়তো ভারত সরকারের ইংরেজি ওয়েবসাইটে এই কথাটা বলা নেই যে ১৯৫০ থেকে ১৯৮৭ এর মধ্যে জন্মালেও মা অথবা বাবাকে ভারতের নাগরিক হতে হবে। (২০১৪ সালে মোদী ক্ষমতায় এসেই মমতা ব্যনারজির অর্থদাতা বাঙালি পুঁজিপতিদের (সুদীপ্ত সেন, গৌতম কুণ্ড) গ্রেফতার শুরু করে মমতাকে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করে দেয়।)  

মিথ্যের ওপর প্রাসাদ বানিয়ে ফেলেছে গুজরাটি মারোয়ারি পুজি ও বিজেপি। একদিকে বাংলাদেশের হিন্দুদের নানা রকম হিন্দু রাষ্ট্রের লোভ দেখিয়ে ভারতে নিয়ে আনা হয় এবং সাংসদ বিধায়ক মন্ত্রী বানানো হয়। আবার অন্যদিকে প্রচার চালানো হয় পশ্চিমবাংলায় যে মুসলমানদের পক্ষে জনবিন্যাস চলে গেছে তার আসল কারণ বাংলাদেশ থেকে বাঙালি মুসলমানরা পশ্চিমবঙ্গে ঢুকেছে। অর্থাৎ সত্যিটা হল বাংলাদেশ থেকে আসা অধিকাংশ অনুপ্রবেশকারী বাঙালি হিন্দু এবং অনুপ্রবেশকারী ধরতে গেলে বাঙালি হিন্দুরাই মূলত ধরা পড়বে। কিন্তু রাজনৈতিক অভিসন্ধির জন্য এটাই প্রচার করা হয়েছে যে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের অধিকাংশই হল বাঙালি মুসলমান। এবার দেখা যাচ্ছে অন্যান্য রাজ্যে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী বলতে মূলত ধরা পড়ছে বাঙালি হিন্দুরাই। অন্যদিকে বাঙালি মুসলমানদেরও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ পাওয়া না গেলেও তাদের জোর করে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

উদ্যেশ্য বাঙালি উচ্ছেদ করে বাঙ্গালির জমি নারী দখল করা 
গুজরাটি মারোয়ারি পুজি জানে যে বর্তমান পশ্চিমবঙ্গে ৫৩% বাঙালি হিন্দু ৩২% মুসলমান (বাঙালি ৩০% ও উর্দু ২% মিলিয়ে) ২% সাঁওতালি ও নেপালি এবং ১৩% গুজরাটি মারোয়ারি বিহারী। গুজরাটি মারওয়ারি পুঁজি চাইছে ১০% বাঙালি মুসলমানকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা করে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দিতে। একবার এটা করতে পারলে যে ফাঁকা জায়গা তৈরি হবে, সেখানে রাজস্থান ও বিহার থেকে আরও বেশি লোক এনে সেই ফাঁকা জায়গা দখল করা হবে। শুধু সেটাই নয় মুসলমানদের জোর কমিয়ে দেওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী বাংলাদেশ থেকে আসা বাঙালি হিন্দুদেরও অনুপ্রবেশকারী বলে উচ্ছেদ করে দিয়ে সমগ্র পশ্চিমবাংলার দখল নিয়ে নেবে গুজরাটি মারওয়ারি ও বিহারীরা।

যদি নন্দীগ্রামে সেদিন বাঙালি মুসলমান কৃষক জয়ী না হতো তাহলে শিল্পায়নের নাম করেই বাঙালির জমি কেড়ে নিয়ে গুজরাটি মারওয়ারি বিহারীরা উন্নয়নের নামে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে পড়তো। তখন ছ্যুতো হতো উন্নয়ন শিল্পায়ন নয়া উদারবাদ ও বিশ্বায়ন। এখন ছ্যুতো হচ্ছে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী ও রোহিঙ্গা। গুজরাটি মারওয়ারি পুজির উদ্দেশ্য একই রয়ে গেছে। আর তা হল বাঙালি উচ্ছেদ।

বাঙালি হিন্দু মধ্যবিত্তের আশু কর্তব্য 
বাঙালি হিন্দু মধ্যবিত্ত যদি সত্যি শিল্পায়ণ করতে চাইত তবে তাদের উচিত ছিল বাঙালি শ্রমিক ও কৃষক-দের সঙ্গে নিয়ে গুজারাতি মারওয়ারি পুঁজিপতিদের উচ্ছেদ করে তাদের ব্যবসা দখল করে আদি পুঁজির সঞ্চয় করা। তারপরে মার্কিন ইউরোপীয় আরব জাপানী কোরিয় চীনা পুঁজির সাথে স্বাধীনভাবে ব্যবসা করার চেষ্টা করা। প্রয়োজনে দিল্লি থেকে স্বাধীন হয়ে। কিন্তু বাঙালি হিন্দু মধ্যবিত্ত চাইল গুজারাতি মারওয়ারি পুঁজির দালাল হয়ে বাঙালি কৃষক উচ্ছেদ করে দালালি খেতে। সত্যি বলতে এখনো বাঙালি হিন্দু মধ্যবিত্ত গাজারাতি মারওয়ারি ব্যবসায়ী উচ্ছেদে সেভাবে মন দেয়নি। তবে বাঙালি হিন্দু মধ্যবিত্ত-দের একটা অংশ এইটুকু বুঝেছে যে গুজারাতি মারওয়ারি বিহারীরা তাদের জমি নারী দখল করছে। এই আত্মরক্ষামূলক বোধদয়কে আক্রমণাত্বক বানিয়ে ফেলাই আশু কর্তব্য। 

Read More

Author: Saikat Bhattacharya

Historical General world order 24-July-2025 by east is rising

নিলুফা ইয়াসমিনের প্রথম হওয়ার বিজ্ঞাপন ও বাঙালি মুসলমান-দের বাংলাদেশি রোহিঙ্গা ট্যাগ দিয়ে বে-নাগরীক করা একই মুদ্রার দুই পিঠ

হিন্দুত্ববাদীরা ভারতে মুসলমান নিধন চালাচ্ছে মূলত দুভাবে:

এক, মুসলমানদের গরু খাওয়ার অপরাধে অথবা বাংলাদেশী রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী বলে মারা হচ্ছে অথবা নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।

দুই, মুসলমান নারীদের উচ্চ শিক্ষাতে এবং চাকরিতে বেশি বেশি করে নিয়ে আনা হচ্ছে অথবা নিয়ে আনার বিজ্ঞাপন করা হচ্ছে যাতে মুসলমান নারীরা উচ্চশিক্ষা ও চাকরির জন্য বেশি সন্তান নিতে না চায়। এভাবেই ভারতে বিশেষ করে মুসলমান অধ্যুষিত রাজ্যগুলোতে মুসলমান জন্মহার যাতে কমিয়ে দেওয়া যায়।

আমি নিজেও ইউজিসি নেট জেআরএফ, অর্থনীতি বিষয়। এই পরীক্ষা বিভিন্ন বিষয়-এ হয়। একেকটা বিষয়ে এক একজন প্রথম হয়। সব মিলিয়ে প্রথম বলে কিছু হয় না। অথচ এরকম একটা মিথ্যে বিজ্ঞাপন কেবলমাত্র এই জন্য করা হয়েছে যাতে বাঙালি মুসলমানদের জন্মহার কমিয়ে দেওয়া যায়।

এটা মনে রাখতে হবে যে আসলে বাংলাদেশী ধরার নামে এসআইআর করে এনআরসি করে বাঙালি মুসলমানদের নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার যে রাজনীতি নিলুফা ইয়াসমিনকে নিয়ে বিজ্ঞাপন আসলে সেই একই রাজনীতির অঙ্গ।

বাঙালি হিন্দুরা বিলুপ্ত হয়ে যাবেই। এরা দুর্গা কালীর মতো নারী দেবী পুজো করে। আর এটাই তাদের পশ্চাৎগামীতার মূল লক্ষণ। যে কারণে এরা যুদ্ধ ব্যবসা রাষ্ট্র গঠন করতে পারে না। উপরন্তু ঘরের মেয়েদের খুব সহজেই স্বাধীনতা দিয়ে দেয় আর এর ফলে বাঙ্গালি হিন্দুদের জন্ম হার অত্যন্ত কম। পৃথিবীতে কোন নারী দেবী পূজারী জাতি আর টিকে নেই। শেষ নারী দেবী পূজারী জাতিটাও খুব শীঘ্রই বিলুপ্ত হবে। নারী দেবী পুজো আসলে প্রমাণ করে বাঙ্গালি হিন্দুরা তাম্র-প্রস্তর যুগেই আটকে আছে। এটা মনে রাখা দরকার যে বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে একটা বড় অংশ সরাসরি এই তাম্র-প্রস্তর যুগের নারী দেবী পুজোর ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। আর সেই জন্য এদের মধ্যেও অনেক সময় নারীকে অতিরিক্ত স্বাধীনতা দিয়ে জন্মহার কমিয়ে ফেলার প্রবণতা আছে। মনে রাখা দরকার পশ্চিমবঙ্গে যদি বাঙালি মুসলমানরা যথেষ্ট উচ্চ জন্মহার (বিহার ও রাজস্থানের তুলনায় বেশি) ধরে রাখতে না পারে তাহলে বিহারী মাড়ওয়ারীরা অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের দখল নিয়ে নেবে।  

Read More

Author: Saikat Bhattacharya

Social Sex War feminism 24-July-2025 by east is rising