দলিত আন্দোলন ও একটি ঐতিহাসিক ভুল

দলিত আন্দোলনের শুরুর দিন থেকেই প্রধান আক্রমণের লক্ষ্য ব্রাহ্মণরা। কিন্তু, ব্রাহ্মণদের শত্রু বানিয়ে দ লিতদের কি কোনো লাভ হয়েছে?

উত্তর না। কারণ, ব্রাহ্মণ যারা অতীব গরীব, এবং আগে আরও মারাত্বক গরীব ছিল, তাদের শত্রু ধরলে সেই শত্রুকে মেরে তার থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার কিছু নেই।

ভিখারি পিটিয়ে যেমন পৌরুষ এর প্রদর্শন হয়না, সেরকমই ভিখারি বামুন ধরে পেটালে কোনো লাভ নেই, কারণ তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার কিছুই নেই। এবং, ঠিক এই কারণেই দ লিত আন্দোলন বাস্তবে দ লিতদের সামান্যতম কোনো উন্নতি করাতে পারেনি, কারণ এই আন্দোলনের লক্ষ্য (শত্রুবোধ) ই ছিল ভুল।

কিন্তু, এই দ লিত আন্দোলনই ব্রিটিশ ভারতের পুরো খেলা ঘুরিয়ে দিত যদি দ লিত আন্দোলনের মুখ্য শত্রু হিসেবে দাগিয়ে দেওয়া যেত রাজপুতদের। যে পরিমাণে ঘৃণা ব্রাহ্মণদের বিরূদ্ধে দ লিত নেতৃত্ব প্রচার করেছে, সেই ঘৃণা যদি ব্রিটিশ ভারতে রাজপুত এবং, তাদের Princely States দের বিরুদ্ধে প্রচার করতো এরা - it would have changed the course of India

Trace back করুন, ১৯৩০ এর দশক - স্বাধীনতা এর পরে ভারতে Princely States দের অবস্থা কি হবে, সেই নিয়ে চিন্তার ভাঁজ চারিদিকে। যদি আম্বেদকর ও দ লিত নেতৃত্ব এই Princely States গুলোর বিরুদ্ধে যেতেন, এবং এই Princely States গুলোর Property *Appropriate* (বলপূর্বক দখল) করার জন্য Move করতেন, তাহলে আজ দ লিত movement এর ইতিহাস অন্য হত। ধরা যাক, একটা আইন পাশ করা হলো যে, ভারতের X Y Z অঞ্চলের Princely States গুলোর দখল সরকার নেবে, এবং যারা already রাজা তাদের একটা কড়িপয়সাও দেওয়া হবেনা। এই আইন মেনে তারা দেশে থাকতে চাইলে, থাকুক নাহলে বেরিয়ে যাক দেশ থেকে।

এদেরকে Narrative এর লড়াইয়ে হারিয়ে দেওয়াও খুব সহজ। মুঘলকালে বিদেশী শত্রুর সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক যারা করে, যারা দ লিতদের ওপর অত্যাচার করে, তাদের স্বাধীন ভারতে থাকার অধিকার নেই কোনো।

হ্যাঁ, কেউ কেউ ভাববে, এগুলো করলে প্রাথমিকভাবে রাজপুত সেনা বিদ্রোহ করতো। কিন্তু, সেই তাদেরকেই খুব সহজে হারিয়ে দেওয়াও যেত, যদি দ লিতদের হাতে Arms provide করা যেত, এবং সেটা করবে উত্তর ভারতের ব্রাহ্মণ লবি এবং, পূর্ব ভারতের বাঙালি উচ্চবর্ণ। বলে রাখা ভালো, ১৮৫৭ এর বিদ্রোহের সময়, উত্তর ভারতের ব্রাহ্মণ সৈনিকদের লবি (যেমন মঙ্গল পান্ডে, ঝাঁসির রানী) প্রবল ব্রিটিশ বিরোধীতা করলেও রাজপুত সৈনিকরা পুরোটাই ব্রিটিশদের সমর্থন করেছিল, এবং রাজপুত সৈনিকরা ইংরেজদের হয়ে বহু জায়গায় ব্রাহ্মণদের হত্যা করে। এই সময় থেকেই ব্রাহ্মণ আর রাজপুতদের সম্পর্ক ভীষণ তিক্ত উত্তর ভারতে। আবার, বাংলাতেও ঐতিহাসিক কারণেই, বাঙালি উচ্চবর্ণের সাথে রাজপুতদের মুঘল যুগ থেকেই শত্রুতা চলে আসছে।

যেকোনো জাতির উত্থানের জন্য দরকার Primitive Capital Accumulation, অর্থাৎ কাঁচা টাকা যা সম্ভব শুধুমাত্র কারোর কাছ থেকে বলপূর্বক দখল নিয়ে।

দলিত Uprising এর জন্য যে Primitive Capital এর দরকার ছিল, সেটা তারা অধিগ্রহণ করতে পারতো রাজপুতদের নারী-ভেড়ি-জমির দখল নিয়ে। অথচ, সেটা না করে এরা শত্রু হিসেবে গণ্য করেছিল কিছু ঠাকুরমশাই পাবলিকদের যাদের ৫ কিলোমিটার দূর থেকে দেখলেও চেনা যায় পাক্কা ভিখারি।

ব্রাহ্মণ - এদের হাতে বংশপরম্পরায় অর্থ নেই, তবে এরা ব্রিটিশ আমলে দ্রুত শিক্ষিত হয়েছে এবং, এদের বাঙালি সেকশন এর সাথে সম্পর্ক ভালো ইংরেজদের।

কায়স্থ - এদের অর্থ থাকলেও, উচ্চশিক্ষিত, Government এর সাথে সম্পর্ক ভালো এবং, ICS এ ভালো লবি থাকার দরুন, এদের appropriate করা যাবেনা। আমরা দেখেছি, তিতুমীর সেই চেষ্টা করায়, সেই দত্তচৌধুরী, নাগচৌধুরী জমিদারগণ direct ব্রিটিশ সেনাকে নামিয়ে আনে তিতুমীর এর বিরুদ্ধে।

মধ্যবর্ণ - জাঠ যাদব এদের সংখ্যা অনেক। শিক্ষা না থাকলেও, এদের কৃষিজমি ছিল অনেক। এদের appropriate করা জটিল অপেক্ষাকৃত।

রাজপুত - এরা একেবারেই শিক্ষিত নয়। এমনকি রাজপুত আর দলিতদের শিক্ষার হার সমতুল্য, তাই এরা ব্রিটিশ যুগের নতুন ব্যবস্থায় দ্রুত দুর্বল হচ্ছিল। এমনকি Very Interestingly, রাজপুতদের ৯৫% property এদের একটা খুব ছোট্ট অংশের হাতে সীমাবদ্ধ। কিন্তু, এদের সংখ্যাগরিষ্ঠ আবার ভাড়াটে দরিদ্র সৈনিক। আবার, এদের ইতিহাস বলে, দ লিতদেরই একটা অংশ একটু পয়সা করে অতীতে রাজপুত হয়েছিল।

অর্থাৎ, Primitive Capital Accumulation Target হিসেবে রাজপুতরা একদম Perfect, যেটা দ লিত Leadership বোঝেনি। সমাজতত্ত্বের ও কমিউনিজম এর Nuance গুলো এরা বুঝলে,

১. স্বাধীনতার পূর্বে রাজপুত হওয়া উচিত ছিল এদের প্রধান শত্রু

২. স্বাধীনতার পর গণতান্ত্রিক ভারতে গুজরাতি-মাড়োয়ারি-বানিয়া লবি ও মধ্যবর্ণ হওয়া উচিত ছিল এদের প্রধান শত্রু।

দ লিত আন্দোলন যদি ব্রাহ্মণদের টার্গেট করার বদলে এদের যারা Actually পয়সাওয়ালা ও পুঁজির দখল নিয়ে বসেছিল, সেই তাদের টার্গেট করত, আজ The Course of History would have been different

নেতৃত্বকে বুঝতে হত, দেওয়ালে আঘাত মেরে হাতটাই ভাঙ্গে। মারতে সেখানে হয়, যেখানে যুদ্ধ জয় সম্ভব।

দ্রষ্টব্য: পোষ্টকর্তা কোনো জাতি সংঘর্ষে বিশ্বাসী নন। তবে, উক্ত আন্দোলনের ফলাফলহীনতার কারণ ব্যাখ্যা করছেন মাত্র।

সৈকত ভট্টাচার্যের সংযোজনঃ 

আসলে ব্রাহ্মণ্যবাদ বিরোধী শব্দটা এই জন্যই ভারতে জনপ্রিয় কারণ এই শব্দ প্রয়োগ করলে ভারত রাষ্ট্র কাউকে আঘাত করবে না। Useless বলেই ব্রাহ্মণ্যবাদ বিরোধী শব্দ টা ভারতীয় রাজনীতিতে এতটা জনপ্রিয়।

অগাস্ট ২০২৪ এ সুপ্রিমকোর্ট রায় দিয়েছে রাজনৈতিক নেতারা যেন দলিত ওবিসিদের যে অংশটা একবার সংরক্ষণের সুবিধা পেয়েছে তাদের পরের জেনারেশন যেন এই সুবিধা আর না পায় সেটা দেখতে। অথচ এই রায়ের সঙ্গে সঙ্গেই সমস্ত রাজনৈতিক নেতারা ঘোষণা করল এক জেনারেশন সংরক্ষণের সুবিধা পেলেও সেই পরিবারের পরের জেনারেশনকে সংরক্ষণ থেকে তারা বঞ্চিত করবে না। সুতরাং বুঝতেই পারা যাচ্ছে যে, দলিত ওবিসিদের মধ্যে যে অর্থবান অংশটা আছে এরাই মূলত সামন্ত রাজপুত ও পুজি প্রতি গুজরাটি মারোয়ারি দের সঙ্গে allied।

Read More

Author: Animesh

Theoretical Hindu 23-July-2025 by east is rising